কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস কুরআন এবং মহানবীর বাণী
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস কোরআনে কি কি ধরনের ফজিলত মূলক আদেশ উপদেশ রয়েছে তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রাখবো। যেখান থেকে আপনি বুঝতে পারবেন কোরবানির ফজিলত তাৎপর্য এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস।
সহি বুখারী, তিরমিজি, আবু দাউদ,কুরআন, এছাড়া বিভিন্ন বড় বড় হাদিস শরীফের বর্ণিত বিভিন্ন হাদিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের কুরবানী সম্পর্কে যা বলেছেন সকল উপদেশ নিষেধ আদেশ গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন।
পোস্ট সুচিপত্রঃ কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস যা জানবেন
- কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো জানাতে
- কোরবানি সম্পর্কে কোরআনের আয়াত কি বলে
- কুরবানির মাংস বন্টনের আয়াত কুরআনে
- কোরবানির সঠিক নিয়ম জেনে নিন
- কোরবানি দেওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি
- কুরবানী নিয়ে সচারচর প্রশ্ন এবং উত্তর
- কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য কি কুরবানী কেন করবেন
- কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কয়টি জেনে নিন
- কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব জানুন
- কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস নিয়ে লেখক এর শেষ মন্তব্য
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো জানাতে
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস দলিল এবং কোরআন ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব যাতে আপনারা বুঝতে পারেন কোরবানির ফজিলত পাবার জন্য কি ধরনের উপায় অবলম্বন করতে হবে। পাশাপাশি কিভাবে কুরবানী করার মাধ্যমে আপনি ফজিলত হাসিল করবেন এবং আল্লাহর সন্তুষ্ট তা অর্জন করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করবো।
প্রথমে কুরবানীর ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে বিভিন্ন হাদিস অনুযায়ী কুরবানীর ফজিলত পেতে কি করতে হয়। সহি বুখারী শরীফের পরিচ্ছেদ: ২২০৫ কুরবানীর বিধান সম্পর্কে ইবন ওমর রাদিয়ালহু তা'আলা আনহু বলেন, কোরবানির সুন্নত এবং স্বীকৃত প্রথা।
৫১৪৭ পরিচ্ছেদে রয়েছে, মোহাম্মদ ইবনে বাশার রা: এবং বারা রা: থেকে বর্ণিত, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এই দিনে সর্বপ্রথম কাজটি হচ্ছে সালাত আদায় করা এবং সালাত আদায় করা শেষে কুরবানি করা। কেহ যদি সালাত আদায় করার পূর্বে কুরবানী করে তাহলে কুরবানী বলে তা গণ্য হবে না বলে জানিয়েছেন এই হাদিসটিতে।
আবু বুরদা ইবনু নিয়ার রা: নামাজের আগে কুরবানী করে দেয়ার কারণে মহানবী তাকে পুনরায় কুরবানী করার কথা বলেছিলেন এবং কুরবানী করতে হয়েছিল। মোশাররফ বারা রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি সালাতের পর কোরবানি করল সে নিয়ম পালন করল এবং যে সালাতের পূর্বে কুরবানী করল সে নিয়ম ভঙ্গ করল।
আনাস ইবনে মালেক রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাম দুই সিং বিশিষ্ট দুটি ধূসর বর্ণের মেঘ কুরবানী করেছিলেন এবং জবাবে করার সময় বিসমিল্লাহ ও তাকদীর। আরো বলেন তিনি নিজেই দেখেছেন সহস্তে কুরবানী করতে। এছাড়া জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত মহানবী মেশ জবাই করার সময় দোয়া পাঠ করতেন, এবং পশুদেরকে কেবলামুখী করে পড়তেন।
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে আরো হাদিস জানুন
দোয়াটি হলো, ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আজদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নসুকি ওয়া মাইয়াইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আল্লাহুম্মা মিনাকা ওয়া লাকা আন মোহাম্মদ বিন উম্মাতিহি।
আমি একলিষ্টভাবে বিশ্ব প্রতিপালকের উপর বিশ্বাস স্থাপন করি এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। আমার সকল ইবাদত কোরবানি নামাজ রোজা হজ জাকাত আল্লাহ তাআলর নৈকট্য এবং সন্তুষ্ট লাভের জন্য। তিনি এক এবং অদ্বিতীয় আমি তার উপর আত্মসমর্পণকারীদর মধ্যে প্রথম। হে আল্লাহ আমি তোমার কাছ থেকে পেয়েছি এবং তোমার কাছেই তোমার জন্য উৎসর্গ করলাম।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাত ২০২৫ কত তারিখে এবং নিয়ম দোয়া এবং ফজিলত
মোহাম্মদ সা: এবং তার উম্মতদের পক্ষ থেকে এই কুরবানী কবুল করে নিন। (কুরআনের সূরা আনআম আয়াত: ৭৯,১৬২-৬৩) এছাড়াও হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত মহানবী সা: দুইটা করে কুরবানী দিতেন একটি হচ্ছে মহানবীর পরিবারবর্গের জন্য এবং একটি তার উম্মতের জন্য আল্লাহর নিকট উৎসর্গ করতেন।
কুরবানী ওয়াজিব কিনা এ বিষয়ে স্পষ্ট যে হাদিস রয়েছে আবু হুরায়া রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করবে না সে যেন ঈদগাহে মাঠের কাছেও প্রবেশ না করে। কারণ সে আল্লাহ দিনকে পরিপূর্ণভবে বিশ্বাস এবং মান্য করে না।।
মোহাম্মদ ইবনে সীরিন রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর কাস কুরবানী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কুরবানী ওয়াজিব নাকি সুন্নত। ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, বিশ্বনবী মোহাম্মদ মোস্তফা আহমদ মোস্তফা সরকারি দো আলম তিনি কোরবানি করেছেন।
তারপরে সকল মুসলমানেরও কুরবানী করেন। সুন্নতে অব্যাহতভাবে প্রবর্তিত হয়েছে। এছাড়াও এই হাদিসটি হিশাম ইবনে আসমার ইসমাইল ইবনে আইয়াজ হাজ্জাস ইবনে আরাদ জাবালা ইবনে সুহাইম রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে উল্লেখিত এই হাদিসটি যা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর কাছ থেকে শুনেছে।
আরো একটি হাদিস, মেকআপ ইবনে সুলাইম রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা একদিন রাসূলুল্লাহ সাথে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করছিলাম, তখন নবী করিম সা: বলেন, হে জনগণেরা! প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি করে কুরবানী ও একটি করে আতিরা রয়েছে। তোমরা কি পাতিরা সম্পর্কে জানো? আতিরা হলো যাকে তোমরা রাজারিয়া বলো।
এছাড়াও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণিত করেছেন যে, কোরবানির পশু জবাই করার পরে শিব কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার পূর্বে আল্লাহতালার কাছে নেক নিয়াতর আমলনামা পৌঁছে যায়। এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত কুরবানী করার জন্য অবশ্যই সঠিক উপায় অবলম্বন করে কুরবানী দিতে হবে।
হযরত আলী আ: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন কুরবানীর পশু জবাই করার মাধ্যমে শিক্ষা নিতে হবে যে, মানুষের মনের ভিতরে যে পশু স্বভাব রয়েছে সেই স্বভাব গুলোক কুরবানী করার, তাহলে প্রকৃত কুরবানী বলে আল্লাহর কাছে বিবেচিত হবে। মহানবীর অনেক সাহাবী ছিল যারা কোরবানির পশু জবাই করতেন না। তারা মনে করতেন পশু জবাই করলে যদি মনের পশু জবাই করতে না পারা যায়।
সবাই যদি বন্যের পশু জবাই করাকেই কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য মনে করে তার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম এর অনেক সাহাবীরা দুনিয়াতে কখনোই পশু কোরবানি করেননি। তবুও তারা আল্লাহর নিকট অনেক মর্যাদাবান এবং দুনিয়াতেই অনেক সাহাবীর জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত হয়েছেন। তাই প্রকৃত কুরবানী হচ্ছে মনের ভিতরের পশু স্বভাব বা খারাপ স্বভাব কে দূর করা বা বর্জন করা।
কোরবানি সম্পর্কে কোরআনের আয়াত কি বলে
কুরবানী সম্পর্কে কুরআনের আয়াত কি বলে সেই বিষয়গুলো এখন আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব যাতে আপনারা বুঝতে পারেন কুরবানী সম্পর্কে কুরআনে কি ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে। কোরআন শরীফের যে সূরাগুলোর মধ্যে আল্লাহতালা কুরবানী সম্পর্কে উম্মতদের কে জানিয়েছেন।
(সূরা সাফফাত আয়াত: ১০৭-১০৮) মহান আল্লাহ বলেন আমি ইসমাইলের পরিবর্তে জবাই করার জন্য দিলাম এক মহান জন্তু। আর আমি এই বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি যেন তারা এটা পালন করে। সূরা কাউসার এর মধ্যে দুই নম্বর আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসুলুল্লাহ কে কুরবানী করার জন্য বলেছেন, তুমি তোমার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ ও পড়ো এবং কুরবানী করো।
এরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন কুরবানীদের সবচাইতে বড় ইবাদত হচ্ছে কুরবানী করা। রঙ্গের মাধ্যমে শিক্ষা নেওয়া যে মনের ভেতরের পশু স্বভাব কুরবানী দিয়ে আল্লাহর সিরাতুল মুস্তাকিনের পথে অগ্রসর হওয়া। আল্লাহতালা প্রত্যেকটি মানুষের সঙ্গে খান্না ছবি শয়তানকে যোগ করে দিয়েছে। কুরবানী দেয়ার মাধ্যমে এই খান্নাস রুপি শয়তান থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।
কুরবানির মাংস বন্টনের আয়াত কুরআনে
কোরবানির মাংস বন্টনের আয়াত কুরআনে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে সেই বিষয়গুলো আমাদের অবশ্যই জানা উচিত এবং কোন উপায় অবলম্বন করে কুরবানির মাংস বন্টন করতে হবে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানা উচিত। কুরবানির মাংস বন্টন নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম কুরআনের মধ্যে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী যা বলেছেন।
তোমরা উহা হতে আহার করে এবং দুস্থ অভাবগ্রস্তদের আহার করাও (সূরা হজ আয়াত নাম্বার ২৮) এশার সূরা হজ্জের ৩৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন কুরবানী জবাই করার সময় আল্লাহ এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করো, এরপর তারা কাত হয়ে পড়ে গেলে সেখান থেকে আহার করো।
আরো পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল করার ১০টি টিপস
সূরা হজের ৩৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন আমি নির্ধারণ করছি প্রত্যেক জাতির জন্য কুরবানী যেন তারা তাদের প্রদত্ত চতুষ্পদ জন্তুর দ্বারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে কুরবানী করে। এরা অনেক প্রচলন চালু আছে সমাজের অনেক জায়গায় কুরবানী করার পর সেই মাংস তিন ভাগ করে এক ভাগ গরিব মুসলিমদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
বাকিগুলো আত্মীয়-স্বজন এবং নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নেওয়া হয়। বিখ্যাত সাহাবী ইবনে মাসুদ রাদিয়াল্লাহু তা'আল আনহু থেকে বর্ণিত, তিনিও তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজে এক ভাগ ফকির মিসকিন এবং এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের জন্য বরাদ্দ করতে বলেছেন। উল্লেখিত আলোচনা থেকে বোঝা যায় কুরবানী দেয়ার পর সেই মাংস সকলের মাছের বন্টন করে দিতে হবে।
কোরবানির সঠিক নিয়ম জেনে নিন
কুরবানীর সঠিক নিয়ম কানুন জেনে কুরবানি না করলে আপনার কুরবানী না হওয়ার সম্ভাবনা থাকিয়ে যেতে পারে এর জন্য কুরবানীর সঠিক নিয়ম জানা অত্যন্ত প্রয়োজন আর কোরবানি কি কারনে করতে হয় এবং কোরবানির ফজিলত কি তাও আমাদের জানা উচিত। কুরবানীর সঠিক নিয়ম হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য এবং নিজের ভিতরের খারাপ স্বভাবকে দূর করার উদ্দেশ্যে পশু কুরবানী করা।
কুরবানি এক ত্যাগের মহিমাকে নিজের ভিতরে বিকশিত করে এবং আল্লাহর দিকে ধাবিত করে। আল্লাহতালা কুরবানী করার জন্য তার সন্তুষ্টি এবং নামাজ কায়েম করতে বলেছে। হকপথে রোজগার করার পরে ছোট বড় যে কোন ধরনের কোরবানী দিলে সেটা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু কেউ যদি অসৎ পথে টাকা ইনকাম করে কুরবানি দেয় সেটা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
সূরা কাওসার আল্লাহ পাক বলেছেন আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কুরবানী করুন। কুরবানীর জন্য দুটা জিনিস সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এবং যে বিষয়ে দুটো কোরবানির ভিতরে সংযুক্ত না থাকলে কোরবানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। প্রথমে কুরবানীর জন্য একনিষ্ঠতা থাকতে হবে। যে লোক দেখানো নয় শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ করা।
দ্বিতীয়ত কোরআন এবং হাদিসের নিয়ম নীতি অনুযায়ী কোরবানি করতে হবে। সূরা মায়েদার ২৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, আল্লাহতালা মুত্তাকীদের কুরবানী কবুল করে থাকেন। কারণ আল্লাহপাক বলেছেন যে কুরবানীর পশুর রক্ত মাংস কোন কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না শুধুমাত্র পৌঁছায় সেই ব্যক্তির নিয়ত।
যে কি উদ্দেশ্য নিয়ে এসে আল্লাহর কাছে কুরবানী করছে তার উদ্দেশ্য সঠিক না থাকলে অবশ্যই কুরবানী গ্রহণযোগ্য নয়। সূরা হজ্জের ২৭ নম্বর আয়াতের ভিতরে এই কথা স্পষ্ট প্রমাণিত আছে। কুরবানী অথবা যে কোন করার আগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন যে কিভাবে এবং কোন উপায় গুলো অবলম্বন করতে হবে এবং কোন উপায় গুলো বর্জন করতে হবে।
কোরবানি দেওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি
কোরবানি দেওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি সেই বিষয়ে আপনাদের জানা উচিত কারণ কোরবানি দেয়ার জন্য যে বিষয়গুলো আপনার ভিতরে থাকতে হবে সেই বিষয়গুলো না থাকলে কোরবানি দেওয়া এবং না দেওয়া সমান হয়ে যাবে। মুসলমানদের জন্য কুরবানী ওয়াজিব এবং সুন্নতের মত কারণ এরই মুসলমানের সৃষ্টি থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে এবং হযরত ইসমাইল এর পুনরুদ্ধার করেছেন।
কোরবানি দেওয়ার জন্য আপনার সর্বপ্রথম মনের ভিতরে নেক নিয়ত থাকতে হবে। এবং হালাল উপায়ে উপার্জন করে কুরবানির পশু কেনার মত সামর্থ্য থাকতে হবে। এছাড়াও পরিবারের খরচ মেটানোর পর যদি জিলহজ মাসের ১০ ১১ ও ১২ তারিখ নির্ধারিত পরিমাণ সোনা বা রুপার থাকে কিংবা নির্ধারিত পরিমাণ সোনা বা রুপার বাজার দর অনুযায়ী ৫০ হাজার থেকে 4 লক্ষ পরিমাণ টাকা যেই ব্যক্তির কাছে জমা আছে সে কুরবানী দেয়ার জন্য উপযুক্ত।
আরো পড়ুনঃ তারাবি নামাজের নিয়ম, নিয়ত, দোয়া, ফজিলত ও বিভিন্ন টিপস
তবে কেউ যদি মুসাফির থাকে তবে তার জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব হবে না। এবং সে যদি প্রথমে মুসাফির এবং পরে বাসের দিকে মুকিম হয়ে যায় তবে তার জন্য কোরবানি ওয়াজিব হবে যদি তার সমর্থ থাকে তাহলে আশা করি বুঝতে পেরেছেন কি ধরনের যোগ্যতা থাকলে আপনি কুরবানী করতে পারবেন এবং কুরবানী আপনার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে।
কুরবানী নিয়ে সচারচর প্রশ্ন এবং উত্তর
প্রশ্ন: কুরবানির নেসাব কত টাকা?
উত্তর: কোরবানির হিসাবের পরিমাণ হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে ৭.৫ ভরি রুপার ক্ষেত্রে ৫২.৫ ভরি। এবং টাকার হিসেবে ৫২.৫ ভরি রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হতে হবে।
প্রশ্ন: কুরবানী কি কারো নামে দেওয়া যাবে?
উত্তর: কুরমান্য কারো নামে দেওয়া যাবে না শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলা এবং আল্লাহর রাসূল এর নামে দেওয়া যাবে।
প্রশ্ন: কুরবানী কতজন দেওয়া যায়?
উত্তর: সামর্থ থাকলে একটি কুরবানী একাই দিয়ে যায় অথবা পশুদের মধ্যে গরু মহিষ উট সর্বত্র ৭ ভাগ পর্যন্ত দেওয়া যায়।
প্রশ্ন: কুরবানীর পশুর বয়স কত হতে হবে?
উত্তর: কুরবানী করার জন্য পশুদের বয়স হতে হবে উটের জন্য পাঁচ বছর মহিষ এবং গরুর জন্য দুই বছর এবং ছাগল হওয়া দুম্বার জন্য এক বছর।
কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য কি কুরবানী কেন করবেন
কুরবানীর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস দলিল এবং কোরআনের বিভিন্ন আয়াত সম্পর্কে আপনাদের সামনে আলোচনা রেখেছি। মহানবী এবং আল্লাহ তা'আলা কত অনেক নিয়ম রেখে গেছেন এবং নিয়ত সঠিক রেখে কোরবানি করলে অনেক ফজিলত পাওয়া যায় সে সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে যা ইতিমধ্যে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি।
আরো পড়ুনঃ তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন মহিলাদের বিশেষ আমল গুলো বিস্তারিত জানুন
কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য আপনার আমার ভিতরে যে ধরনের শয়তানি কার্যকলাপ গুলো রয়েছে সেই শয়তানি কার্যকলাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করা। কোরবানির ত্যাগ এর মাধ্যমে মানুষের সারা জীবনের সকল খারাপ স্বভাবগুলো ত্যাগ করার ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
তাই বলা যায় কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জন এবং নিজের মধ্যে থাকা খান্না ছবি শয়তানের ধোঁকা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে আল্লাহর ইবাদতের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় হচ্ছে কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য। অনেকেই কুরবানি করেন লোক দেখানোর জন্য কিন্তু লোক দেখানো কোন ইবাদতই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কয়টি জেনে নিন
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত সম্পর্কে জেনে নিয়ে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন যে আপনার উপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে কিনা। কুরবানী যাদের জন্য ওয়াজিব হবে তাদের কাছে ৭.৫ তোলা স্বর্ণ বা তার সমপরিমাণ অর্থ থাকতে হবে এবং বাসায় খাবারের জন্য অর্থ থাকতে হবে যাতে জিলহজ মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত চলে।
এছাড়াও একজন কুরবানী দেবার জন্য তাকে সুস্থ মস্তিষ্ক এবং মুসাফির অবস্থায় থাকা যাবে না মুকিম অবস্থায় পর্যাপ্ত সম্পদ সহকারে যদি থাকে তাহলে তার জন্য কোরবানি ওয়াজিব। আশা করি কি পরিমাণ অর্থ থাকলে আপনার জন্য সুন্নত বা ওয়াজিব হয়ে যাবে তা আপনি নির্ধারণ করতে পারবেন বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।
এছাড়াও আপনার কাছে যে অর্থ সম্পদ রয়েছে সেই অর্থ সম্পদগুলো হালাল উপায়ে উপার্জন করা কিনা সেটাও নিশ্চিন্ত হতে হবে। আপনি অসৎ পথে ইনকাম করে টাকার পাহাড় করে রাখলেও সেই টাকার পাহাড় ইবাদতের জন্য কোন কাজে আসবে না। সবচাইতে বড় বিষয় হচ্ছে যে সঠিক উপায়ে হালাল ইবাদত করা।
কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব জানুন
কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াদি সে বিষয়ে অনেকে বিভিন্ন ধরনের মত পেশ করেছেন তার মধ্যে থেকে সবচাইতে গ্রহণযোগ্য মতে আপনাদের উপস্থাপন করলাম। কুরবানি করার জন্য আপনাকে অবশ্যই টাকা সম্পদ পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকতে হবে যাও করে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যে কি পরিমাণ অর্থ থাকলে আপনি কুরবানী করতে পারবেন।
কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আপনি সবকিছু করতে প্রস্তুত এবং নিজের সবচাইতে প্রিয় জিনিসটি ত্যাগ করতে প্রস্তুত। যেমন ইব্রাহিম নবী তার পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর জন্য কুরবানী করার উদ্দেশ্যে নিয়াত করেছিলেন। কোরবানী আদিকাল থেকে চলে আসছে আদম আলাইহির সালাত ও সালাম থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত কোরবানীর নিয়ম প্রচলিত।
যেহেতু কুরবানী একটি সামর্থ্যের সাথে জড়িত সেহেতু সামর্থ্য ছাড়া কুরবানী করা যায় না। এখানে দেখা যায় প্রত্যেকটা মানুষের কুরবানী দেয়ার সামর্থ থকে না তাই কুরবানীকে ফরজ হিসেবে গণ্য করা হয় না। ফরজ ইবাদত প্রত্যেকটা মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক তাই যেহেতু সবার পক্ষে সম্ভব হয় না কুরবানী দেওয়ার তাই এটা ওয়াজিব হিসেবে বিবেচনা করা হয় যার স্বার্থ আছে সেই তোর কুরবানী হিসেবে পালন করতে পারবে।
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস নিয়ে লেখক এর শেষ মন্তব্য
কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশেষ হাদিসগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে এবং কোরআন থেকে কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে কি বলা হয়েছে তা সম্পর্কেও আপনাদের সামনে আলোচনা রেখেছি। কি ধরনের সম্পদ থাকলে কোরবানি করতে পারবেন এবং কি উপায় অবলম্বন করে কুরবানী করতে হবে।
এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আপনি যেখান থেকে আমল করতে পারবেন এবং উল্লেখিত তথ্যগুলো থেকে কোরবানি সম্পর্কে বিশেষ বিশেষ তথ্য সংগ্রহ করে আমল করতে পারবেন। কারণ আল্লাহ তাআলা ইবাদত করার জন্য কোরবানি করা অনেক প্রয়োজন এবং গ্রহণযোগ্য ইবাদত।
মুক্তআঁখি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url