শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল করার ১০টি টিপস
শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল করার জন্য নিয়মটি সঠিকভাবে জানতে হবে। আপনি যদি সঠিক উপায় শবে কদরের নামাজ পড়ার উপায় না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টের ভিতরে সকল তথ্য দেওয়া আছে যা আপনার আমল করার কাজটি কারো সহজ কর তুলবে।
আপনি জানতে পারবেন শবে কদরের নিয়ম এবং বিভিন্ন হাদিস সম্পর্কে এবং কি কি দোয়া পড়ে আমলটি করতে হয় এবং কোন নিয়ম অবলম্বন করতে হয় সকল বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করো যাতে আপনারা বুঝতে পারেন যে শবে কদরের নামাজ কিভাবে আদায় করতে হয় এবং সঠিক পদ্ধতি কি ধরনের হয়।
পোস্ট সুচিপত্রঃ শবে কদর নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল করার 10 টি টিপস
- শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল
- শবে কদরের নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয় জেনে নিন
- শবে কদর নামাজের সূরা গুলো কি কি
- শবে কদরের নামাজ কত রাকাত জেনে নিন
- কদর নিয়ে সততা জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর
- শবে কদরের নামাজ কখন পড়তে হয় জানুন
- শবে কদরের নামাজ বিতরের আগে না পরে আদায় করে?
- কদরের নামাজ সুন্নত না নফল জেনে নিন
- শবে কদরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জেনে রাখুন
- শবে কদর নামাজের নিয়ম নিয়ে শেষ মন্তব্য
শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল
শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুযায়ী আমল করতে হলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে সঠিক নিয়মটি যে কিভাবে নামাজ আদায় করলে সঠিক উপায়ে শবে কদরের নামাজ আদায় করা হবে। শবে কদরের নামাজের নিয়ম নিয়ে অনেকেরই অনেক ধরনের মতামত রয়েছে কেউ বলে কোন নিয়ম নির্দিষ্ট করে বলা নেই কোন হাদিসের ভিতরে। আবার কেউ অনেক ধরনের নিয়ম উপস্থাপন করেছে যা শবে কদরের নামাজের নিয়ম।
তাই আপনাদের সামনে সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা রাখবো আপনি নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করে সঠিক উপায় আমল করবেন এবং নেকী অর্জন করবেন। যাতে আপনার ইহকাল এবং পরকালে অনেক শান্তি আসবে। আমাদেরকে প্রথমে জানতে হবে শবে কদরের রাতটা আসলে কি? শবে কদরের রাত হলো রমজান মাসের ২১ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে বেজড় সংখ্যার যে রাত পরে সে রাতকে পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাত হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
অর্থাৎ ২৬ তারিখ রমজান মাসের দিবাগত রাতেকে কদরের রাত হিসেবে। শবে কদর যে ভাষাটি প্রচলিত সেটি হচ্ছে ফারসি ভাষা এর কোরআনের ভাষায় যে কথা প্রচলিত আছে তাহলেতুল কদর যার অর্থ অতি উচ্চ সম্মানিত এবং মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রাত। আরবি ভাষায় এখানে লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ, লাইলাতুল অর্থ রজনী, সম্মানিত বা মর্যাদা পূর্ণ রাত। এই রাতে আল্লাহর বান্দা বান্দিরা তাদের বিভিন্ন গুনাহ মাফ করার জন্য এবং পরকালে মুক্তির জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে ইবাদত বন্দেগী করেন।
এরাতের ফজিলত পাওয়ার জন্য এবং সকল গুনাহ মাফের জন্য আপনাকে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম জানতে হবে তাই চলুন আগে নিয়মটা জেনে নিন, শবে কদরের নামাজের নিয়ম নফল নামাজের নিয়ম যেই উপায়ে পালন করে সেভাবে পালন করতে পারেন। দুই রাকাত করে নিয়ত করে নিতে হবে এবং নফল নামাজ পড়ার মত করে দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে হবে। নামাজ পড়ার সময় সূরা ফাতিহা পড়ার পর ইখলাস সূরা কদর সূরা আয়তাল কুসরি,
সূরা তাকাসুর ইত্যাদি মিলে সকল দোয়া গুলো পড়ে আপনি নামাজ সম্পন্ন করতে পারেন, কেউ কেউ ১২ রাকাত পড়ে আবার কেউ কেউ সারারাত নফল ইবাদতের মাধ্যমে কাটিয়ে দেয় দুই রাকাত করে নামাজ পড়ে। হাদিসে বর্ণিত আছে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারারাত নফল নামাজের রত থাকতেন। এবং অনেক দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সেজদায় রত হয়ে থাকতেন।
শবে কদরের নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয় জেনে নিন
শবে কদরের নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয় জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই নিয়ত করার মাধ্যমে এই রাতের ফজিলত এবং সকল নিকির অর্জন করতে পারবেন এবং পাপ থেকে মুক্তি পাবেন। শবে কদরের নিয়ত বাংলাতেও করা যায় এবং আরবিতেও করা যায় আপনি যেটা সুবিধা মনে করবেন সেই উপায় অবলম্বন করে নিয়ত করে নামাজ আদায় করতে পারবেন। আল্লাহতালা পৃথিবীর সকল ভাষায় সৃষ্টি করেছেন এবং সকল ভাষায় জানেন আল্লাহতালা শুধু মানুষের নিয়ত দেখেন।
কুরআনের ভাষা আরবিতে আরবিতে অনেকেই বাঁধেন আবার বাংলাতেও নিহাতে বানতে পারেন এতে কোন প্রকারের কোন সমস্যা নেই। কারণ আল্লাহপক কোরআনের ভিতরে বলেছেন সূরা ইব্রাহীম এর 4 নম্বর আয়াতে, আমি প্রত্যেক জাতির জন্য তাদের নিজের নিজের ভাষায় রাসুল প্রেরণ করেছি আমার নিদর্শন গুলো বর্ণনা করার জন্য।
আরো পড়ুনঃ শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫ নিয়ত এবং ফজিলত জানুন
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত কোরআনের ভাষায়: নাওয়াইতুয়ান উছল্লিয়া লিল্লা-হি তা আ লা রাক আতাই সালা-তি লাইলাতুল কদর নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জি হাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার। এই কোরআনের ভাষার আরবি নিয়োগটিও ব্যবহার করতে পারেন অথবা আপনি যদি বাংলা ভাষা ব্যবহার করেন তাদের কোন সমস্যা নেই চলুন বাংলা ভাষাটি জেনে নিন কিভাবে বাংলায় নিয়ত করতে হয়।
শবে কদরের নামাজের বাংলা নিয়ত হলো, আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহ এবং আল্লাহর উদ্দেশ্য শেষ শবে কদরের দু'রাকাত নফল নামাজ আদায় নিয়ত করলাম আল্লাহু আকবার। এবার আপনি নামাজের নিয়ম অনুযায়ী নামাজ আদায় করতে পারেন বিভিন্ন সূরা এবং কোরআনের আয়াত পড়ার মাধ্যমে থেকে আপনি আল্লাহর কাছে মুক্তি পেতে পারেন এবং আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত হতে পারেন।
শবে কদর নামাজের সূরা গুলো কি কি
শবে কদর নামাজের সূরা গুলো কেন থাকলে আপনি খুব সহজেই শবে বরাতের নামাজের মধ্যে শবে কদরের নফল নামাজ আদায় করতে পারবে। নিয়ত করতে হবে নামাজ পড়ার জন্য এবং নিয়ত করা হয়ে গেলে, সূরা ফাতিহা পড়তে হবে সূরা ফাতিহা পড়া শেষ হয়ে গেলে, সূরা ইখলাস পড়তে পারবেন, সূরা কদর পড়তে পারবেন, তাকাসুর পড়তে পারবেন, এছাড়াও কুরআনের বিভিন্ন সূরা গুলো পড়তে পারবেন।
শবে কদরের যে দোয়া পড়তে পারবেন এবং হাদিসে বর্ণিত রয়েছে এ ধরনের দোয়া গুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম হে দিনের রাসুল আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি তাহলে কি দোয়া পড়বো এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম জানালেন।
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফওয়ান তহিবুল আফুয়া ফাফু আন্নি যার অর্থ হয় হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল ক্ষমা করতে ভালোবাসেন অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন(মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাযহাব, তিরমিজি, মিশকাত শরীফ) এ হাদিস গুলোতে বর্ণনাটি দেওয়া আছে। এছাড়াও আরো যে বিষয়গুলো আছে তার বিস্তারিত আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। যেমত গুলো কথর মাধ্যমে আপনি বিশেষভাবে উপকৃত হবেন এবং আল্লাহর হেদায়েত প্রাপ্ত হবেন।
- দোয়া: রাব্বি গফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।
- অর্থ: হে আমার প্রভু: আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার উপর রহম করুন, আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারি। (কুরআনের সূরা মুমিনুন আয়াত নম্বর ১১৮)
- দোয়া: রাব্বানা আমান্ন ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আনতা খাইরুর রাব্বিহিম।
- অর্থ: হে আমার পালনকর্তা আমরা বিশ্বাসী স্থাপন করেছি অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করো ও তোমার আমাদের প্রতি রহম করো। তুমিতো দয়ালুর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সূরা মুমিনুন আয়াত নাম্বার ১০৯)
- দোয়া: রাব্বি ইন্নি জ্বলমতু নাফসি ফাকফিরলি।
- অর্থ: হে প্রভু নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।(সূরা কাসাস, আয়াত ১৬)
- দোয়া: রাব্বানা জালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কুনান্না মিনাল খাসেরীন।
- অর্থ: হে আমার প্রভু আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি যদি আপনাদের ক্ষমা না করেন আমাদের দয়া করেন তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব (সূরা আরাফ: আয়াত ২৩)
- দোয়া: রাব্বানা ফাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা, ইয়া ওয়ামা ইয়া কমুল হিসাব।
- অর্থ: আমাদের প্রভু যেদিন হিসাব কায়েম হবে সেদিন তুমি আমাদের আমাকে ক্ষমা করো আমার বাবা-মা কেউ ক্ষমা করে এবং মুমিনদেরকে ক্ষমা করো। (সূরা ইব্রাহীম: আয়াত ৪১)
- দোয়া: সামিনা ও আফতানা গফরা নাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।
- এর অর্থ: আমরা আপনার বিধান শুনলাম এবং মেনে নিলাম হে আমাদের রব আমাদের ক্ষমা করুন আমাদেরকে আপনাদের দিকে ফিরে যেতে হবে। (সূরা আল বাকারা আয়াত ২৮৫)
- দোয়া: ওয়াফু আন্না ওয়া ফাগফিরলানা আংতা মাওলানা ভাঙসর না আলাল কাওমিল কাফিরিন।
- অর্থ: হে আমাদের রব। যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দেবেন না অবশ্যই। আমাদের পাপমোচন করুন আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন আপনি আমাদের একমাত্র প্রতিপালক। (সূর বাকারা: আয়াত ২৮৬)
- দোয়া: রাব্বানা ফাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবা কনা বিল ঈমানী।
- অর্থ: হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমরা যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরকে ক্ষমা করুন ( সূরা হাশর আয়াত ১০)
- দোয়া: রাব্বানা গফিল আলা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিল আকদামানা ওয়াংসর না আলাল কাওমিল কাফিরিন।
- অর্থ: হে আমাদের প্রভু আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে ভুল ত্রুটি হয়েছে তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচার রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন।(সূরা আল ইমরান: আয়াত ১৪৭)
- দোয়া: রাব্বানা ফাকফির লানা জুনু বানা ওয় কাফফির আন্না সাইয়াতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আকবার।
- অর্থ: আমাদের প্রতিপালক আমাদের গুনাহ গুলো ক্ষমা করুন আমাদের ভুলগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন (সূরা আল ইমরান আয়াত ১৯৩)
আশা করি উল্লেখিত দোয়া গুলো ব্যবহার করে আপনি অভিহিত হবেন এবং আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের জন্য ক্ষমা চাইবেন। এছাড়াও আরো একটি দোয়া রয়েছে যে দোয়াটি শুধু আরবি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম সে দোয়াটি হচ্ছে লাইলাতুল কদরের দোয়া, ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতুল কদর, ওয়ামা আদ্রাকা মা লাইলাতুল কদর, লাইলাতুল কদর খাইরুম মিনান আলফির শাহর, তনজ্জালুন, মালাইকা তুহু ওয়া রুহুহ, ফিহা বিজিইনি, রাব্বিহিম মিনকুল্লি আমর সালামুন হিয়া হাতটা মাতলাইন ফজর।
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত জেনে নিন
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত জানা প্রয়োজন কারণ নামাজ পড়তে হলে নামাজের সকল তথ্যগলো বিস্তারিতভাবে জানতে হবে। প্রতিটা ইসলামিক মত বিশ্বাসী মানুষদের শবে কদরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা জানা দরকার কারণ রাতের অনেক ফজিলত এবং নিয়ামত রয়েছে যে রাতে মানুষ আল্লাহ তাআলার কাছে নব ইবাদত করার মাধ্যমে কোন মাফের জন্য আসজি জানায়। তাই আমরা সকলেই তো করুনা কোন গুনার সাথে জড়িত বা কোনো না কোনভাবেই খারাপ কাজ করি।
অথবা আর কাজ করিতে এই গুনাহগুলো মুক্তি করার জন্য শবে কদরের নামাজ পড়াটা জরুরী। নামাজ পড়াটা যেমন জরুরি যেমন এই নামাজ সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান রাখা জরুরি। শবে কদরের নামাজ কত রাকাত পড়তে হয় সেই বিষয়ে অনেক মতবাদ রয়েছে তবে আমি আপনাদের সামনে দুটোই উপস্থাপন করবো। প্রথমে কিছু কিছু মাওলানা সাহেব রয়েছে তারা বলে থাকেন যে 12 রাকাত নামাজ পড়লেই যথেষ্ট নফল নামাজ হিসেবে শবে বরাতের রাতে।
আরো পড়ুনঃ জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম এবং অর্থসহ কিছু ব্যখ্যা
আবার কিছু কিছু আলেম ওলামা রয়েছে যারা বলেন যে সারারাত 12 রাকাত পড়ার পাশাপাশি দুই রাকাত করে নিয়ত করে সারারাত বিভিন্ন দোয়া এবং সূরা পড়ার মাধ্যমে নামাজ পড়া যাবে। তাই আপনি যে দল বিশ্বাসী সেই অনুযায়ী নামাজ পড়তে পারেন যদি আপনার নিয়ে ঠিক থাকে তাহলে সকল বিশ্বাস থেকেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। বিশ্বাসগুলো যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তাকে নেক বান্দা হিসেবে বিবেচনা করেন।
কদর নিয়ে সততা জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর
প্রশ্ন: শবে কদরের নামাজ কত রাকাত?
উত্তর: লাইলাতুল কদরের দুই রাকাত করে নফল নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু আপনার যদি সময় এবং ভালোবাসা থাকে তাহলে আপনি দুই রাকাত করে সারারাত নফল নামাজ আদায় করতে পারবেন। পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াত, দুরুদ শরীফ পাঠ জিকির অভিন্ন কাজ করতে পারবেন।
প্রশ্ন: কদরের সূরা কখন পড়তে হয়?
উত্তর: কদরের সূরা পড়তে হয় রমজান মাসের ২৭ তারিখ দিবা কত রাতে। পাপীদের গুনাহ মাফের জন্য এ রাত অত্যন্ত উপকারী এবং আল্লাহতালা মানুষদের গুনাহ মাফ করে দেন।
প্রশ্ন: লাইলাতুল কদরের কি নামাজ?
উত্তর: লাইলাতুল কদরের নামাজ হয়েছে নফল ইবাদতের নামাজ। এরাতে বান্ধারা আল্লাহর নিকট গুনাহ মাফের জন্য অবিভূত প্রয়োজনে ইবাদত বন্দি কি করে।
প্রশ্ন: সূরা কদর কতবার পড়তে হবে?
উত্তর: পবিত্র হয়ে ওযু করে তিনবার দুরুদে ইব্রাহিম পাঠ করুন এবং সূরা কদর দিনে সাতবার পড়ার চেষ্টা করুন।
প্রশ্ন: লাইলাতুল কদর কিভাবে বুঝবো?
উত্তর: এভাবে অনেক হাদিস রয়েছে রমজান মাসের প্রথম 10 টি এবং মাসের 10 দিন ইফতি ফাঁক করে বলেন জিব্রিল জিবরীল আমীন, লাইলাতুল কদরের শেষে 10 দিন। আমার সঙ্গে যে ইতিভাগ করতে চায় সে যেন শেষের 10 দিন এতে ভাগ করে। এ থেকে বোঝা যায় রমজানের শেষের 10 দিন অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য এবং শবে কদর হিসেবে বিবেচিত।
শবে কদরের নামাজ কখন পড়তে হয় জানুন
শবে কদরের নামাজ কখন পড়তে হয় তা জানা অত্যাবশ্যক একজন মানুষ নামাজ আদায় করো নামাজের সময় জানা অত্যন্ত জরুরী। সচরাচার এই নামাজের রাতে পড়া হয় কারণ এই রাতের অনেক মহিমা এবং গুনাগুন রয়েছে এড়াতে আল্লাহতালা নিজে বান্দাদের গুনাহ মাফ করার জন্য অপেক্ষা করেন। তাই শবে কদরের নামাজ কখন পড়বে সেটা জানা অবশ্যই আপনার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
শবে কদরের নামাজ পড়তে হলে আপনাকে প্রথমে এশার নামাজ পড়ে নিতে হবে কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে বেতের নামাজ যেন পড়ে না খেলেন সেই দিকে। নামাজ বাদ দিয়ে আপনি সকল এশার নামাজ শেষ করে শুরু করতে পারবেন কদরের নামাজ। শবে কদরের নামাজ পড়ার জন্য আপনাকে দুই রাকাত করে নিয়ত বেঁধে নামাজ আদায় করতে হবে। আপনি সকালে সারারাত দুই রাকাত করে নিয়ত বেঁধে নামাজ আদায় করতে পারেন।
কোরআন তেলাওয়াত দুরুদ শরীফ পাঠ জিকির করা, বিভিন্ন হাদিস পড়া ইত্যাদি কাজ করে এর রাতে ইবাদত করতে পারেন। এই রাত এতটাই ফজিলত পূর্ণ রাজ্যে এ রাতে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের চাওয়া পাওয়া শুনে নিকারি এবং সঠিক কিভাবে আল্লাহর কাছে ইবাদতকারীদের কে সকল গুনা কথা মাফ করে দিন এবং রহমত দান করেন। শবে কদরের রাত পর্যন্ত মর্যাদাশীল এবং নেয়ামত ও রাত এরাতেই ইবাদত করার মাধ্যমে মানুষ তার গুনাহ মাফ করে নিতে পারে।
শবে কদরের নামাজ বিতরের আগে না পরে আদায় করে?
শবে কদরের নামাজ বিতরের আগে না পরে পড়তে হয়তো বিষয়ে আপনাদের বিস্তারিত ধারণা দেবো এ বিষয় থেকে আপনারা জানতে পারবেন আসলে কি শবে কদরের নামাজ ভিতরে আগে পড়তে হয় না পরে পড়তে হয় সে বিষয়ে। এমন কোন নির্দিষ্ট হাদিস পাওয়া যায়নি যে যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে শবে কদরের আগে বেতের নামাজ পড়তে হবে নাকি আগে পড়তে হবে। তাই আপনি আগে বা পরে যেকোনো সময়ই করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ মুসলিম ছেলেদের আধুনিক নাম অর্থসহ কিচছু গুরুত্বপুর্ণ আলোচনা
যদিও সচরাতের নামাজের পর কোন নামাজ পড়া হয় না তাই আপনি চাইলে এশার নামাজ এবং তারাবির নামাজ শেষ করার পর বেতের নামাজ পড়ার আগে শবে কদরের নামাজ পড়তে পারেন সারারাত এবং সেই শবে কদরের ইবাদত শেষ করার পর বেতের নামাজ পড়ে নিয়ে শেষ করতে পারেন আপনার ইবাদত করা সে রাতের জন্য। হযরত আলী আলাইহিস সালাতু সাল্লাম থেকে বর্ণিত তার সময়ে 20 রাকাত তারাবি নামাজের আদেশ দেন এবং তিনি বেতের সালাত পড়ান।
অনেক হাদিসে এর প্রমাণ রয়েছে এই হাদিসগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে, মাওলা আলী কিভাবে নামাজ পড়াতন এবং কি উপায়ে তারাবির নামাজ এবং বেতের নামাজ সাথে কদরের নামাজ পড়াতেন। অনেক হাদিসে উচ্চারিত রয়েছে তবে (সুনানে কুরবা লিলবাইহাকি, হাদিস নং ৪২৯১) এখানে মাওলা আলীর শাসনামলের যে নিয়ম পালন করা হতো তা উল্লেখ করা হয়েছে আপনি ইচ্ছা করলে সেই হাদিসটি সংগ্রহ করে পড়ে নিতে পারেন।
কদরের নামাজ সুন্নত না নফল জেনে নিন
ফজরের নামাজ সুন্নত নাকি নফল জানা অত্যন্ত জরুরী কারণ আপনি যদি ইবাদত করতে চান তাহলে ইবাদত বিষয় সম্পর্কে অবশ্যই সঠিক জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন। আপনি যদি না জেনে থাকেন যে কদরের নামাজ সুন্নত না নফল। এত রাতে কে জানতে হবে সুন্নত কাকে বলে এবং নফল কাকে বলে। শূন্য হচ্ছে সেই সকল ইবাদত যে ইবাদত গুলো মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম তার উম্মতের কে করতে বলেছেন এবং নিজে করেছেন।
আর নফল ইবাদত হচ্ছে যেগুলো মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম পালন করেছিলেন এবং কিন্তু কেউ ইচ্ছা করলে সেই নফল ইবাদত করতে পারে এবং নাও করতে পারে যেই ইবাদতগুলো করা এবং না করার মধ্যে কোন জোর অবস্থিত না সেই ইবাদতগুলোকে নফল বলে আখ্যায়িত করে দেয়। প্রকৃত নামাজের জন্য আপনাকে মন থেকে নিয়ত করে করে নিতে হবে। আপনি যখন মনের মধ্যে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য নিজের মনকে রাজি করাবেন।
সেই সময়তা হলো সব চাইতে বড় নিয়ত কারণ আল্লাহ তাআলা সব কিছু জানেন এবং বুঝেন। যে তার কোন বান্দা-বান্দী কোন নিয়তে এবং কি ভেবে আল্লাহর কাছে চাই আল্লাহ তা'আলা তা বুঝতে পারেন। সে চাওয়া পাওয়া যদি সঠিক এবং নেককার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আল্লাহতালা দেন এবং আল্লাহতালা না দিতে পারলে নিজেই লজ্জা পান। কারণ আল্লাহ বলেছেন কেউ যদি ন্যায় সঙ্গত ভাবে তার কাছে চাই তাহলে সে কখনোই খালি হাতে ফিরিয়ে দেয় না।
শবে কদরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জেনে রাখুন
শবে কদরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানলে আপনি অবশ্যই এই নামাজ পড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবেন এবং আপনার জীবনের সমস্ত গুণ কথাগুলোকে মাফ করে দিতে পারবেন এবং আপনি নিষ্পাপ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন। এই রাতে অনেক ফজিলত রয়েছে এই রাতে ইবাদত কোনটি করার মাধ্যমে আপনি আপনার জীবনের সকল বিপদ থেকে রক্ষা পাবেন। এই রাত একটি মহিমা পূর্ণ এবং ফজিলত পূর্ণ রাত আল্লাহর রাসূল নিজেই রাতে ইবাদত করেছেন।
শবে কদরের নামাজকে সুন্নত অথবা নফল নামাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু আল্লাহর ইবাদতের জন্য সুন্নত এবং নফল সবচাইতে বড় বিষয় না, বড় বিষয় হচ্ছে আল্লাহর দিন অর্জন করার জন্য সকল খারাপ কাজকে প্রত্যাহার করে আল্লাহর দেখানো এবং আল্লাহর রাসূলের দেখানো পথ অনুযায়ী নিজেকে পরিদর্শন করার নাম হচ্ছে ইবাদত। আপনি যদি ইবাদত করতে চান তাহলে অবশ্যই আল্লাহর রাসূলের এবং আল্লাহর দেখানো পথে ইবাদত করবেন।
আল্লাহর রাসূল এ রাতের অনেক ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন এবং এর রাতের বিভিন্ন দোয়া কালমা পড়ার জন্য বিভিন্ন উপদেশ দিয়েছেন। যে সকল দোয়া পড়ার জন্য মহানবী সাল্লাম বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন তার বিস্তারিত আলোচনা এই পোস্টের ভিতরে করা হয়েছে আপনি পোস্টটি ভালোভাবে পড়ে সেই সকল বিষয়ে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং আপনার জীবনে তা বাস্তবায়িত করতে পারেন। তাহলে আপনার জীবন হবে সুন্দর এবং আল্লাহতালার কাছে গ্রহণযোগ্য।
শবে কদরের নামাজের নিয়ম নিয়ে শেষ মন্তব্য
শবে কদরের নামাজের নিয়ম নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি যে তথ্যগুলো জানার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই সঠিক উপায় ইবাদত বন্দেগী করতে পারে। কারণ ইবাদত করার জন্য সঠিক নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরি কারণ নিয়ম না জানা থাকলে আপনি সঠিক উপায়ে কিভাবে আল্লাহর কাছে ইবাদত করবেন। এই পোস্টের ভিতরে শবে কদর নামাজের নিয়ম এবং নিয়ত সহ বিভিন্ন দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
পোস্টের মধ্য থেকে আপনি জানতে পারবেন শবে বরাত কি কেনই বা এ দিনকে পালন করা হয় এবং এই রাতে কি কি ইবাদত করা যায় সে সকল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যাতে আপনি বুঝতে পারেন এবং সেই নিয়মগুলো অবলম্বন করে আল্লাহর দরবারে আপনার নিজের গুনাহ মাফের জন্য দোয়া করতে পারেন এবং ইবাদত বন্দি করতে পারেন। পাশাপাশি আল্লাহকে রাজি-খুশি করে তার নৈকট্য লাভ করতে পারেন।
মুক্তআঁখি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url