কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চার ২১টি কার্যকরী উপায়
কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য যে কার্যকরী উপায় গুলো রয়েছে, তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া আরো জানতে পারবেন কমলার রস দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করতে হয় এবং কিভাবে কমলার বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরি করতে হয়।
কিভাবে কমলার খোসার গুড়া তৈরি করবেন এবং কমলার খোসা বাটা কিভাবে বানাবেন কমলার খোসার ব্যবহার কি কি কাজে হয়। কমলা সম্পর্কে সকল তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে যাতে খুব সহজেই কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করতে পারেন।
পোস্ট সুচিপত্রঃ কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চার ২১টি কার্যকরী উপায় জানুন
- কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায়
- কমলার রস দিয়ে রূপচর্চা করতে জানুন
- কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরির উপায়
- কমলা খোসা বাটা কিভাবে তৈরি করবেন
- কমলা খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানুন
- কমলার খোসা গুড়া করার উপায় কি কি
- কমলার খোসার পাউডার তৈরি ও ব্যবহার
- কমলালেবুর খোসার ব্যবহার করার উপায়
- কমলার খোসার গুনাগুন সম্পর্কে জেনে রাখুন
- কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা নিয়ে লেখক এর শেষ মন্তব্য
কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায়
কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায় জানা থাকলে আপনি খুব সহজে কমলালেবু খাওয়ার পর যে খোসা থাকে সে খোসা ব্যবহার করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রূপচর্চা মূলক কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। রূপচর্চা করার জন্য আদিকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে কমলালেবুর খোসা। তাহলে চলুন জানি কমলালেবুর খোসা দিয়ে কি কি চুপচাপ লোক উপকারিতা পাওয়া যায়।
কমলালেবু খোসা দিয়ে রূপচর্চা:
মুখে ব্রণ দূর করার ক্ষেত্রে: আপনার মুখে যদি ব্রণ থাকে তাহলে ব্রণ দূর করার জন্য কমলালেবুর খোসা ব্যবহার করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কমলালেবুর খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে হবে এবং কিভাবে ববহার করতে হবে তা জানুন।
ত্বককে মসৃণ রাখতে: তোকে মসৃণ ও নরম রাখতে ব্যবহার করুন কমলালেবুর খোসা, এর জন্য আপনাকে কমলালেবুর খোসা নিয়ে পেস্ট তৈরি করে তার সাথে হলুদ যুক্ত করে ব্যবহার করতে পারবেন।
ত্বকের তেলাক্ত তা দূর করতে: সময় দেখা যায় ত্বকে তেলাক্ত হয়ে থাকে এর প্রভাব দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করতে হবে, কিন্তু আপনি যদি ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান করতে পারেন তাহলে কেমন হয়? এর জন্য আপনাকে কমলালেবুর যে প্যাক তৈরি করা হয় সেই প্যাক ব্যবহার করতে হবে একদিন পর পর।
রোদ পোড়া ভাব দূর করতে: ত্বকের রত পোড়া ভাব দূর করার জন্য আপনি কমলার খোসার বিভিন্ন প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারবেন। এর জন্য কমলালেবুর খোসার গুড়া ১ টেবিল চামচ, ১ টেবিল চামচ হলুদ গুড়া, এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
ত্বকের ভারসাম্য রক্ষা: কমলালেবুর খোসা ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার ত্বকের বিভিন্ন ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবেন যেমন অনেক সময় ত্বক মসৃণ না থেকে বা বিভিন্ন আদ্রতায় ত্বকের বিভিন্ন ধরনের রুক্ষ ভাব দেখা দেয়। এর জন্য আপনি কমলালেবুর কাঁচা খোসা পেস্ট হিসেবে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারবেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি: ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিদিন রাত্রে শোবার আগে বিভিন্ন ধরনের নাইট ক্রিম ব্যবহার না করে এই কমলার খোসার ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বকের শুষ্কতা থেকে বাঁচাতে: ত্বকের শুষ্ক থেকে বাঁচাতে আপনার ত্বকের কমলার খোসা ও টক দইয়ের প্যাক হিসেবে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য টক দই এক টেবিল চামচ কমলা লেবুর গোড়া একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান।
ফেস মাস্ক: কমলালেবুর খোসা গুড়া করে দুধ বা দই এর সাথে মিশিয়ে ফেস মাক্ তৈরি করে মুখে ব্যবহার করে ত্বকের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।
স্ক্যাব: কমলার খোসার গুড়া চিনি এবং নারকেলের তেল মিশিয়ে একটি হালকা করে স্ক্রাব করুন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বকে মসৃণ করে।
টোনার: কমলালেবুর রস টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন এটি ত্বকের পিএইচ রক্ষা করে এবং ব্যালেন্স করে।
অ্যাকনে প্রতিরোধক: কমলার খোসার গুড়া পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান এটি ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
ময়েশ্চারাইজার: কমলার খোসার রস এবং মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান এটি ত্বকের মশ্চারাইজার ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
ডার্ক স্পট রিমুভার: কমলার খোসার গুড়া এবং টক দই মিশিয়ে একটি পেজ তৈরি করে ত্বকের ডাক স্পটের খবর লাগানো হলে ধীরে ধীরে তা দূর হয়ে যায়।
লিপ বাম: কমলালেবুর খোসার গুড়া এবং নারকেলের তেল মিশে লিপবাম তৈরি করে ঠোঁট ব্যবহার করতে পারেনি এতে ঠোঁট ফাটার ও বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে।
নখের যত্নে: নখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় তাই কমলালেবুর খোসা দিয়ে নখ ঘষলে এটা পরিষ্কার পরিছন্ন থাকে এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
চুলের কন্ডিশনার হিসেবে: চুলের কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কমলার খোসা পেস্ট এবং মধু মিশিয়ে চুলে লাগানিতে চুল কন্ডিশন করে এবং চুলের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করে।
বডি স্ক্রাব: কমলার খোসার গোড়া চিনি এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি বডি স্ক্রাব তৈরি করে এটি ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করা যায়।
বডি ওয়াশ: কমলার খোসার পাউডার দিয়ে বডি ওয়াশ তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেনি এতে ত্বকের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করবে।
ফুলের টনিক: কমলার খোসার রস চুলের গোড়ায় লাগিয় রাখতে পারেন এটা চুলের বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে এবং চুল পড়া রোধ করে।
আঁচিল দূর করা: কমলার খোসার রস নিয়মিত আঁচিলে লাগালে আঁচিল দূর হয়ে যায়।
গোসলের পানি: কমলার খোসার রস বা কমলার খোসা পানিতে ভিজিয়ে রেখেছি পানিত গোসল করলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয় এবং ত্বকের ঘামাচি দূর হয়।
কমলালেবু এবং কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য উল্লিখিত উপায় গুলো অত্যন্ত কার্যকরী। এবং এই সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য আপনি খুব সহজেই কমলালেবু ব্যবহার করে সমাধান করতে পারবেন। কারণ কমলালেবুর ভিতরে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা মানুষের ভন্নভাবে উপকারে আসে। শুধু রূপচর্চায় নয় পাশাপাশি অনেক ধরনের চাহিদা মেটানোর কাজে ব্যবহার হয় এই কমলালেবু।
কমলার রস দিয়ে রূপচর্চা করতে জানুন
কমলার রস দিয়ে রূপচর্চা করতে যে উপায় গুলো ব্যবহার করতে হবে তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হলো। কমলার রস অত্যন্ত ভিটামিন সি সমৃদ্ধতায় আপনার শরীরের ভিটামিন সি এর অভাব থাকার কারণে যে সকল সমস্যা সৃষ্টি হয় তার সকল সমস্যার সমাধান করতে পারবেন কমলা লেবুর রস দিয়ে। এছাড়া কমলালেবুর রস দিয়ে মানুষ রূপচর্চা করার জন্য বিশেষভাবে ব্যবহার করে।
আরো পড়ুনঃ মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ২৮ টি কার্যকরী টিপস
গোসল করার জন্য কমলালেবুর রস ব্যবহার করে, ব্রণ থেকে বাঁচার জন্য কমলালেবুর রস ব্যবহার করে, কমলার খোসার বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য কমলালেবুর রস ব্যবহার করে। এছাড়া মানুষ খাবার জন্য তো কমলালেবু ব্যবহার করে এটা আমরা সবাই জানে। একজন মানুষ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য অনেক ধরনের উপায় অবলম্বন করে তাই তাদের জন্য এই পোস্টটি একজন প্রাকৃতিক উপায়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য যদি কোন উপায় খুঁজে থাকেন।
তাহলে এই কমলালেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন কমলা লেবুর রসের সাথে মধু এবং হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারে এতে আপনার মুখের বলিরেখা এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করবে নিমেষে। কমলাবের রস দিয়ে আপনি সিরাম তৈরি করতে পারবেন বিভিন্ন ধরনের ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন এবং এর ব্যবহার করার জন্য আপনার সামনে সহজ উপায় হচ্ছে। কমলালেবুর রস হলুদ এবং নিমপাতা বাটা একসাথে মুখে ব্যবহার করতে পারেন এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরির উপায়
কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা জানলে আপনি খুব সহজেই কিছু উপকরণ ব্যবহার করে কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে। আপনার বিভিন্ন ধরনের মুখের বা ত্বকের সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারবেন নিজেকে। এজন্য কিছু উপকরণ প্রয়োজন হবে। যেমন, প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে কিছু পরিমাণ কমলার খোসা।
আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে ১৮টি ঘরোয়া টিপস
সেই খোসা গুলোকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে, শুকনো কমলার খোসা গুলো একটি ব্লেন্ডারের মাধ্যমে ব্লেন্ডার করে নিয়ে গুড়া তৈরি করতে হবে। সেই গুড়াগুলোকে একটি ছাকনা দিয়ে ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে এবং যেগুলো ঝকনা থেকে বের হবে না সেগুলো রেখে দিতে হবে। এবং সে কমলার খোসার গুড়া এক চা চামচ একটি পাত্রে নিতে হবে। আরো কিছু উপকরণ মেশাতে হবে যেমন অ্যালোভেরা জেল এক চা চামচ।
মধু এক চা চামচ, এছাড়াও হলুদ গুঁড়া মিশাতে পারবেন ১ চা চামচ, সবচাইতে ভালো হয় কাঁচা হলুদ বেটে নিয়ে এক চামচ পরিমাণ দিলে, উপকরণটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে এবং এই উপকরণটি ভালোভাবে মিশিয়ে নেওয়া হয়ে গেলে একদিন পরপর পেস্টি বা সিরামটি ব্যবহার করতে হবে। এতে আপনার মুখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বকে উজ্জল এবং ধকধকে করে রাখার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কমলা খোসা বাটা কিভাবে তৈরি করবেন
কমলা খোসা বাটা তৈরি করার জন্য আপনাকে যে ফর্মুলাটি অবলম্বন করতে হবে তা আপনার সামনে উপস্থাপন করবো। যাতে আপনি খুব সহজেই এই প্রক্রিয়াটি অবলম্বন করে কমলার খোসা বাটা তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। অনেক আগে থেকেই কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করা হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করতে চান তাহলে এই কমলা খোসা বাটা প্রক্রিয়াটি জেনে নিন।
প্রথমে আপনাকে কমলা খোসা সংগ্রহ করতে হবে। কমলা থেকে কমলা খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। কমলা খোসা গুলোকে সুন্দর করে রোদে শুকিয়ে ঝরঝরে বা পানিমুক্ত করে নিতে হবে। এই অবস্থায় আপনি সেই খোসা গুলোকে ব্লেন্ডার অথবা যে কোনভাবে ব্লেন্ডার করতে পারবেন। এই উপকরণটি বানানোর পর আপনি যে কোন ধরনের বোতল বা কাচের পাত্রে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন এতে অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ২২ টি কার্যকারী টিপস
আশা করি বুঝতে পেরেছেন কমলার খোসা বাটা কিভাবে তৈরি করতে হয় এবং কমলার খোসা দিয়ে যে ধরনের উপকারিতা পাবেন তা এই পোস্টের ভিতরে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও আরো পড়ুন সেকশন গুলো রয়েছে যেখানে এই বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে আপনার প্রয়োজন এসেই সেকশন গুলো ভিজিট করতে পারেন। এতে আপনি কমলার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং কমলালেবুর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
কমলা খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানুন
কমলা খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানলে আপনি খুব সহজেই কমলার খোসা ব্যবহার করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক তৈরি করে ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন। যেমন আপনি যদি ব্রণ এবং রোদে পোড়া কালো দাগ, এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা জড়িত সমাধান চান তাহলে খুব সহজেই এই কমলার খোসার ব্যবহার করতে পারে।
আপনাদের সামনে কমলার খোসা ব্যবহার করার কয়েকটি উপায় উপস্থাপন করা হয়েছে। যে উপায় গুলো ব্যবহার করে আপনার ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। ত্বকের যত্নে ব্যবহার করার জন্য আপনি কমলালেবুর খোসা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফেস প্যাক, এবং নাইট ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন এটি অনেক কার্যকরী। আপনি সাধারণ পানিতে কমলালেবুর খোসা গোড়া মিশিয়ে ব্যবহার করে উপকারিত হবেন।
এর জন্য আপনাকে নিয়মিত কমলালেবুর খোসার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সেই নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। পোস্টের ভিতরে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে আপনি নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য কমলালেবুর খোসা ব্যবহার করবেন। এছাড়াও কমলালেবু আরো অনেক উপকারে আসে যেই উপকার গুলো বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করার চাইতে কমলালেবুর মাধ্যমে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
কমলার খোসা গুড়া করার উপায় কি কি
কমলার খোসা গুড়া করার উপায় না জেনে থাকলে এখান থেকে জেনে নিতে পারেন। এটি অত্যন্ত সহজ এবং কার্যকরী একটি উপায়। কমলার খোসার গুড়া করার জন্য আপনাকে যে উপায়গুলো অবলম্বন করতে হবে সেটি হচ্ছে, কমলালবু সংগ্রহ করতে হবে। এবং সে কমলালেবু থেকে তার খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। কমলালেবুতে খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পর সেই খোসা গুলোকে একটি পাত্রে রেখে রোদে শুকাতে হবে।
আরো পড়ুনঃ শুধু অ্যালোভেরা মাখলে কি হয় ১৩ টি কার্যকারি উপকারিতা
এবং সেই খোসাগুলো সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে গেলে। খোসা গুলোকে একটি ব্লেন্ডারের মাধ্যমে পেস্ট বা গুড়া করে নিতে পারবেন। গুরা গুলোকে সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং এই গুড়াগুলো অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ কমলার খোসা গুড়া ব্যবহার করার মাধ্যমে রূপচর্চা করা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের শারীরিক বা মানসিক স্বাস্থ্যসম্মত উপকার পাওয়া যায়। কমলার খোসা গুড়ার ব্যবহার করে এখন ত্বকের যত্ন নেওয়া হয়।
বিশেষ করে নারীরা এটি বেশি ব্যবহার করে থাকেন তাদের বিভিন্ন ধরনের রূপচর্চার কাজে। এছাড়াও আপনি এটি ব্যবহার করতে পারবেন ক্লিনার হিসেবে এবং সুগন্ধি হিসেবে। রান্নার ক্ষেত্রেও এটা বিশেষভাবে ব্যবহার গ্রহণযোগ্য তাই আপনি রান্নার সুগন্ধি বৃদ্ধি করার জন্য এটি রান্নার সাথে মসলা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সুতরাং বুঝতে পেরেছেন যে কিভাবে কমলার খোসার গুড়া করতে হয় এবং তা কি কি কাজে ব্যবহার করা যায়।
কমলার খোসার পাউডার তৈরি ও ব্যবহার
কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য আপনি কমলার খোসা পাউডার হিসেবে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারবেন। কমলা একটি খাদ্য উপযোগী অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল এবং এই ফলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি ফ্লামেন্টরি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। কমলার খোসার পাউডার তৈরি ও ব্যবহার করার জন্য আপনাকে প্রথমে কমলার খোসার পাউডার তৈরি করতে হবে। এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে।
- একটি ব্লেন্ডার যা দিয়ে কমলার খোসা গুড়া করা হবে।
- চারটি কমলালেবু যেখান থেকে আপনি কমলা খোসা সংগ্রহ করে শুকিয়ে রাখবেন।
- সংরক্ষণ করার জন্য একটি কাচের বোতল।
সকল উপকরণ পেয়ে গেলে আপনি প্রথমে কমলা লেবু থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে কমলালেবুর খোসা গুলোকে ভালো করে শুকিয়ে নেবেন। শুকনো কমলালেবুর খোসা গুলোকে আপনি ছোট ছোট টুকরা করে নিবেন যাতে ব্লেন্ডার করা সহজ হয়। সেই টুকরাগুলোকে ব্লেন্ডারের ভিতরে দিয়ে ব্লেন্ডার টি চালু করতে হবে। এভাবে ব্লেন্ডার বন্ধ করে চালু করে। সহজেই আপনি কমলালেবুর খোসা থেকে পাউডার তৈরি করতে পারেন।
কমলালেবুর খোসার ব্যবহার করার উপায়
কমলালেবু খোসা দিয়ে রূপচর্চা করতে হলে আপনাকে কমলালেবুর খোসার ব্যবহার করার উপায় গুলি সম্পর্কে জানতে হবে। যেকোনো জিনিস ব্যবহার করার জন্য সঠিক নিয়ম ব্যবহার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আপনাকে সঠিক নিয়ম জানতে হবে এবং সঠিক উপায়ে ব্যবহার করতে হবে যার জন্য আপনাদের সামনে নিম্নে উল্লেখিত ব্যবহার বিধিগলো উপস্থাপন করলাম।
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় পুদিনা পাতার ব্যবহার ও ১০ টি কার্যকারি উপকারিতা
প্রথমে কমলার খোসা গুঁড়া ২ টেবিল চামচ নিতে হবে এবং কমলার রস দুই ফোটা দিতে হবে, লেবুর রস দুইটা ও চন্দন গুড়া সামান্য পরিমাণ যোগ করতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি করার পর একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে এবং এটা হালকা করে মুখে মেখে ম্যাসাজ করতে হবে। শুকিয়ে গেলে তা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধরে নিতে হবে।
দ্বিতীয় পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে প্রথমে আপনাকে কমলার খোসার গুড়া ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া চিমটি পরিমাণ ও এক টেবিল নিয়ে একটি মিক্সড তৈরি করতে হবে এগুলো আপনার মুখে গলায় ঘাড়ে মেসেজ করতে পারবেন এবং ১০ মিনিট পর্যন্ত সময় রাখার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এবং মুখ শুকিয়ে গেলে হালকা গোলাপ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ: এই পর্যায়ে কমলার খোসা ২ টেবিল চামচ লেবুর রস দুই ফোঁটা এবং সামান্য পরিমাণ কমলার রস নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে এবং এই মিশ্রণটি ঘন আকারে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে এবং সর্বনিম্ন ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে এবং গোলাপ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে শুকিয়ে যাওয়ার পর। এতে মুখের দাগ ও বরুন কালো দাগের মত বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে।
চতুর্থ ধাপ: এ পর্যায়ে আপনাকে ময়দা নিতে হবে এক টেবিল চামচ ভালো গমের ময়দা, এবং কমলার রস নিতে হবে তিন টেবিল চামচ। সাথে কমলার খোসার গোড়া এক টেবিল চামচ পরিত হবে এই মিশ্রণটি একসাথে মিশিয়ে নেওয়ার পরে মুখে ও ঘাড়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর গোলাপ জল দিয়ে সুন্দরভাবে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে এবং আপনার ত্বকে বেশি উজ্জ্বল এবং ব্লোইং হয়ে উঠবে।
কমলার খোসার গুনাগুন সম্পর্কে জেনে রাখুন
কমলার খোসার গুনাগুন সম্পর্কে যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন। কমলার খোসাতে বা কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এবং এন্টি ফেমিন টরে রয়েছে এবং বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম কমলালবু ক্যালরি বিদ্যমান থাকে ৪৭% টোটাল ফ্যাট বিদ্যামান থাকে, কোলেস্টল 0 মি গ্রা, সোডিয়াম 0 মি গ্রাম, পটাশিয়াম ১৮১ মিলিগ্রাম।
- টোটাল কার্বোহাইড্রেট ১২ গ্রাম।
- ডেটারি ফিভার ২.৪ গ্রাম
- সুগার লেভেল ৯ গ্রাম থাকে।
- বিভিন্ন প্রোটিন থাকে পয়েন্ট নাইন গ্রাম।
- ভিটামিন সি ৮৮%
- আয়রন 0%।
- ভিটামিন বি৬ ৫%
- ম্যাগনেসিয়াম ২%
- ক্যালসিয়াম ৪%
- ভিটামিন ডি 0%
উল্লেখিত পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন গুলো কমলার খোসার গুনাগুন হিসেবে বিচার করা হয়। একটি কমলাতে এত ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেগুলো একটা মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং কার্যকরী তাই আপনি যদি এ সকল উল্লেখিত সকল পুষ্টি চাহিদা এবং গুণাগুণ সমৃদ্ধ খাবার খেতে চান তাহলে অবশ্যই কমলালেবু ব্যবহার করতে পারেন এবং কমলালেবুর খোসা ছাড়িয়ে নেবার পরে তা সংরক্ষণ করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা নিয়ে লেখক এর শেষ মন্তব্য
কমলালেবুর খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য যে যে উপায়গুলো অবলম্বন করতে হবে তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। এছাড়া বিভিন্ন উপায়ে কমলালেবুর উপকারিতা এবং অপকারিতা কিভাবে পাবেন তা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। কমলার খোসা গুড়া করার উপায় এবং কমলার খোসা ব্যবহার করে কিভাবে উপকৃত হবেন তার সকল বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।
বুঝতেই পারছেন যে কমলালেবু অত্যন্ত উপকারী এবং প্রয়োজনীয় একটি ফল এর ব্যবহারের দিক রয়েছে অনেক। আপনি যদি কমলালেবুর ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পেতে চান তাহলে উক্ত পোস্টের তথ্যগুলো ভালো করে জেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাবেন বলে আশা করা যায়।
মুক্তআঁখি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url